শুধু মাত্র ৪ টি দেশই প্রসেসর বানাতে পারে। বাংলাদেশে কেন প্রসেসর তৈরি হয় না?
ওয়েলকাম টু RelancingBd
আমি রবিন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো বিশ্বে শুধুমাত্র 4 টি দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে কেনো কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের প্রসেসর তৈরি হয় না। সত্যিই এটি একটা অবাক করা বিষয়। বিশ্বে এতগুলো দেশ রয়েছে অনেক ধনী দেশ রয়েছে কোটি কোটি টাকা উড়ছে কিন্তু তারা প্রসেসর তৈরি করতে পারছে না। আজকের এই টিউনটি পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন কেনো সব দেশেই প্রসেসর তৈরি হয় না।
বিশ্বের অনেক ধনী ধনী দেশ রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স আরো অনেক দেশই প্রসেসর তৈরি করতে পারে না আর আমাদের বাংলাদেশ বা ভারতের কথা তো দূরেই থাক। সবথেকে বড় কথা হলো শুধুমাত্র চারটি দেশ চায়না, তাইওয়ান, আমেরিকা এবং সাউথ কোরিয়ায় প্রসেসর তৈরি হয়।
প্রসেসর জিনিসটা আসলে কি? এটি কি কি দিয়ে বানানো হয়? এটির মধ্যে কি কি থাকে?
প্রসেসর লক্ষ লক্ষ ট্রানজিস্টার দিয়ে তৈরি হয়। আপনি জানেন কি কিছুদিন আগে অ্যাপল কোম্পানির যে Bionic A14 চিপটা আসলো সেই চিপের মধ্যে কয়টি ট্রানজিস্টার আছে?
১১.৮ বিলিয়ন ট্রানজিস্টার আছে ঐটুকু একটা চিপের মধ্যে। এটা কি কল্পনা করা যায় ১১.৮ বিলিয়ন এবং সেটা 5 nanometer febrication এ তৈরি। 5 Nanometer মানে এখানে যে ট্রানজিস্টার গুলো ব্যাবহার করা হয়েছে সেগুলো এত্ত ছোট যা খালি চোখে দেখা যায় না। এত্ত ছোট ছোট ট্রানজিস্টার গুলো তৈরি করা কি অনেক সহজ।
এই প্রসেসর এর মধ্যে যে কোটি কোটি ট্রানজিস্টার থাকে তারাই প্রসেসরের সব কাজ সম্পন্ন করে।
এই ট্রানজিস্টার গুলো তৈরি হই Silicon থেকে অর্থাৎ বালি থেকে। আপনি আবার ভাববেন না যে এটা যেনো তেনো বালি। প্রসেসরের জন্য এই বলো কনা গুলো একদম ১০০% পিউর হতে হয়। এই বালি কণাগুলো দুই চারটা দেশের কাছে available আছে তাই সেই দেশগুলোই এই প্রসেসর তৈরি করতে পারে। এখন আপনি ভাবতে পারেন যে দেশ গুলোতে এই বালিকনা গুলো রয়েছে তাদের কাছ থেকে ক্রয় করে আনলেই তো হয়। এত্ত সহজ না! আমেরিকার কাছে পিউর সিলিকন আছে কিন্তু আমেরিকাই এই পিউর সিলিকন এর ব্যাপারে একদম বলে দিয়েছে তারা এটা কাউকেই দিবে না।
অন্য অন্য দেশ থেকে যদিও এই বালি গুলো কিনা যায় কিন্তু এটি দেশে আনতে এত্ত খরচ হয় যে এটা দেশে এনে ব্যাবসা করতে গেলে 100 বছরেও লাভের মুখ দেখা যাবে না।
আর শুধু বালি হলেই তো আর প্রসেসর তৈরি করা যাবে না। প্রসেসরের মধ্যে থাকা এই ছোট ছোট ট্রানজিস্টার গুলো তো বানাতে হবে।
এসব প্রসেসর ফ্যাক্টরি গুলোতে যেসব লেবারেরা কাজ করে তাদেরকে শুধু লেবার বললে ভুল হবে তারা প্রত্যেকেই এক একজন সাইন্টিস্ট।
তো সেই অভিজ্ঞ লেবার বা সাইন্টিস্ট আমাদের দেশে কোথায় পাবো?
ট্রেনিং দিয়ে হয়তো একজন পাবো দশজন পাবো কিন্তু একটা প্রসেসর ফ্যাক্টরিতে তো হাজার হাজার লেবারের প্রয়োজন। আর সেই ফ্যাক্টরি গুলোতে যে হাই লেভেলের উন্নত প্রযুক্তিগুলো রয়েছে সেগুলো আমাদের দেশে নেই। কিন্তু আমেরিকা সেই সব দিক থেকে অনেক এগিয়ে গেছে কারণ তারা ১৯৭১ সাল থেকেই এসব কাজের সাথে জড়িত।
আজ থেকে 50 বা 60 বছর আগে ইন্টেল কোম্পানি সিলিকন নিয়ে এই প্রসেসরের কাজ শুরু করেছিল আমেরিকার California শহরে।
অন্য অন্য দেশ কেনো প্রসেসর তৈরি করতে পারে না এর কারন শুধু উপরের গুলোই না। আরো অনেক কারন আছে যেগুলো নিয়ে এখন আলোচনা করবো।
পরের পয়েন্ট আসে প্রসেসরের প্যাটার্ন নিয়ে। ওই বালুকণা গুলো নিয়ে সেসব কোম্পানি যখন একটা febrication তৈরি করে যখন তারা আর্কিটেকচার তৈরি করে তারা যা technology ইউজ করে তারা আলটিমেটলি যেসব ডিজাইন তৈরি করে তার জন্য তাদের যে লাইসেন্স থাকে অন্য অন্য দেশ বা বাংলাদেশ সেসব লাইসেন্স কোথায় পাবে?
অন্য অন্য দেশ বা বাংলাদেশ হয়তো তাদের মত ডিজাইন করে বানাতে পারবে কিন্তু যেহুতু তাদের মত বানাচ্ছে তার জন্য তারা কখনই লাইসেন্স পাবে না। তারা পেটেন্ট আইনে আটকে যাবে।
কিন্তু তারা যদি অন্য ভাবে অন্য ডিজাইনেও তৈরি করতে পারে তাহলেও সমস্যা আছে। Web Developer রা intel, AMD, ARM এর জন্য যেসব সফটওয়্যার তৈরি করে রেখেছে সেগুলো তো নতুন কোনো প্রসেসর এ চলবে না। আর স্মার্টফোন বা কম্পিউটার কোম্পানিগুলো তো আর ওই নতুন প্রসেসরটি নিবে না। কারণ সেগুলোতে সটওয়্যারগুলো চলবে না।
আবার ওয়েব ডেভলপাররাও আপনার ঐ নতুন প্রসেসর এর জন্য কোড লিখতে যাবে না। কারণ কোড লিখা অনেক সময়ের ব্যাপার আর অনেক পরিশ্রমের কাজ।
আবার অন্য একটি কারণ হচ্ছে -
এই প্রসেসর বানানোর জন্য যে ফ্যাক্টরি বানাতে হই সেটা অনেক ব্যয় বহুল। উদাহরণ স্বরূপ TSMC যে 3 Nanometer এর প্রসেসর বানাতে চাচ্ছে আমরা যদি সেরকম প্রসেসর বানানোর কথা চিন্তা করি তাহলে এই মুহূর্তে শুধুমাত্র মেশিন বসাতে আমাদের খরচ করতে হবে ২৩ বিলিয়ন US Dollar,,
শুধু এগুলোই নয় এই প্রসেসর বানানোর জন্য পিউর ওয়াটার, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, এবং এগুলোর থেকে বড় দরকার যে জায়গায় প্রসেসর তৈরি হবে সেই জায়গার পরিবেশটা Quantamination করা। সেই জায়গার পরিবেশটা একদম দূষণ মুক্ত হতে হবে। যেখানে একটা ব্যাকটেরিয়াও যেনো না থাকে। এমন আরো অনেক কারণ রয়েছে যার জন্য বিশ্বের সব দেশেই প্রসেসর তৈরি করা যায় না।
এবার আশা করি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই আর্টিকেল এর কোনো বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন॥ সুস্থ্য থাকুন॥ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন। খোদাহাফেজ॥